ডিফেন্ডার মাসুরার বাড়িতে জেলা প্রশাসক: মুছে গেল উচ্ছেদ চিহ্ন

খেলাধুলা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাফ চ্যাম্পিয়ন ডেফান্ডার মাসুরার সরকারি জায়গায় বসতভিটা ভেঙে না দেওয়ার জন্য সড়ক জনপথ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। ‘ঘরভাঙা আতঙ্কে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ডিফেন্ডার মাসুরার পরিবার!’ শীর্ষক খবর বুধবার ও বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের নজরে আসা মাত্রই তিনি বৃহস্পতিবার সকালে ছুটে যান মাসুরার বাড়ি। সেখানে মাসুরা পারভীনের অসুস্থ্য পিতা রজব আলীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এসময় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিনের পিতা রজব আলী ও মাতা ফাতেমা বেগমকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শারীরিক কোন সমস্যা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে হবে। হাসপাতালে সব ধরণের ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, যতদিন মাসুরার পরিবার স্থায়ী বসতবাড়ি না হবে ততদিন তারা এখানে বসবাস করবে। এই বাড়ি যাতে ভাঙা না হয় সেজন্য তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশ দেন। এসময় মাসুরার বাড়ির দেওয়ালে উচ্ছেদ চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী উচ্ছেদ চিহ্ন মুছে দেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউদ্দিন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম, লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রসঙ্গত: নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এই ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। হিমালয়ের দেশ নেপালকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবে সবাই আনন্দের জোয়ারে ভাসলেও ঘরভাঙার আতঙ্কে ছিল মাসুরার পরিবার।
সাতক্ষীরা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বেতনা নদীর তীরে বিনেরপোতা এলাকায় মাসুরাদের বাড়ি। মাসুরার বাবা রজব আলী বলেন, আজ মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো। জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। মাসুরার বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছি। মাসুরা পারভীনের মা ফাতেমা বেগমও একই অনুভূতি প্রকাশ করেন।
জেলা প্রশাসক আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন। সড়ক জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের দেওয়া লাল চিহ্ন মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি নিজে উপস্থিত থেকে রাস্তার পাশে বসত ঘর থেকে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লাল চিহ্ন মুছে দেন। শেখ হাসিনার সরকারের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, যতদিন স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য মাসুরার জায়গা না হবে, ততদিন পর্যন্ত এখানে মাসুরার অসহায় পরিবার বসবাস করবে। নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিনের জন্য সাতক্ষীরাসহ গোটা দেশ গর্বিত। সাবিনা ও মাসুরাকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে মাসুরার পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.