সন্ত্রাসী রউফকে প্রত্যাখ্যানের শপথ আলিপুরবাসীর

সারাদেশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আলিপুর ইউনিয়নের সর্বত্র সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে এসেছে গডফাদার রউফ-সবুর পরিবার। গডফাদার এই পরিবারটির নির্যাতনের শিকার হয়নি আলিপুরে এমন পরিবার পাওয়া বেশ কঠিন। অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েও মুখ খুলতে সাহস পায়নি তারা। রউফ-সবুরদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তাকে হতে হয়েছে নির্যাতনের শিকার, খেতে হয়েছে মামলা অথবা ছাড়তে হয়েছে এলাকা।
সাতক্ষীরা জেলায় আওয়ামী বিরোধী সকল কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেয় পরিবারটি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া, বোমা ফাটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করা, ইউনিয়নবাসীকে জিম্মি করে জমি দখল, সাধারণ মানুষের বাড়িতে অস্ত্র রেখে ধরিয়ে দেওয়া, জমির মালিককে হারির টাকা না দেওয়া, হিন্দু পরিবারের জমি দখল করে উচ্ছেদ করা, সরকারি জমি দখল করাসহ গত চার দশক ইউনিয়নে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে গডফাদার রউফ-সবুর পরিবার।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়ে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গডফাদার আব্দুর রউফের নাম উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছিলেন।
ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে রউফের সন্ত্রাসী তৎপরতা ব্যাপক আকার ধারণ করে। পরে অপারেশন ক্লিনহাটে গ্রেপ্তার হন তিনি। বর্তমানে আব্দুর রউফ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক। সরকারবিরোধী কর্মকান্ডসহ আব্দুর রউফ বর্তমানে অন্তত ১২টি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তদন্তাধীন রয়েছে একাধিক মামলা। কিন্তু অসংখ্য মামলার আসামি হয়েও ১৫বছরে তাকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে মাত্র একবার। সবসময় অর্থের জোরে সবাইকে ম্যানেজ করে চলে এসেছেন তিনি।
এদিকে, আগামী ২৮ এপ্রিল আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভোটকে সামনে রেখে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে রউফ-সবুরদের গডফাদারির কথা। এবার নড়েচড়ে বসেছেন আলিপুর ইউনিয়নবাসী। চার দশকের গডফাদার রউফ-সবুর পরিবারের জিম্মি দশা থেকে মুক্তি চান সাধারণ মানুষ। ইউনিয়নবাসী জোটবদ্ধভাবে সকল নির্যাতনের জবাব দিতে চান ভোটের মাধ্যমে।
এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আলিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিত জিয়াউল ইসলাম জিয়া, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শীর্ষ গডফাদার আব্দুর রউফ এবং মো. সামছুজ্জামান নামের তিন প্রার্থী।
ইতোমধ্যে এলাকায় জিয়াউল ইসলাম জিয়ার পক্ষে রব উঠেছে। মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে তার নাম।
এদিকে, সাধারণ ভোটাররা আর কোনোভাবেই আব্দুর রউফকে আর চান না। তারা সাহসের সাথে আব্দুর রউফকে প্রত্যাখ্যানের শপথ নিয়েছেন। সাধারণ ভোটাররা রউফ-সবুরের কালোটাকার প্রভাবমুক্ত ভোট চান। তারা জানান, রউফ-সবুররা প্রতিদিন বস্তা-বস্তা টাকা নিয়ে মাঠে নামছেন। তারা যেন প্রশাসনের দৃষ্টি এড়াতে না পারে সেজন্য তদারকি বৃদ্ধির দাবি তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published.