সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের অন্যতম ডিফেন্ডার মাসুরা এখন সাতক্ষীরায়

সারাদেশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাফ জয়ের পর প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরায় এলেন নারী ফুটবল দলের অন্যতম ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন।
বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি ছুটিতে বিনেরপোতাস্থ বাড়িতে ফেরেন। পরে তিনি শ্যামনগরে ফুটবল খেলতে যান। তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
বিনেরপোতায় মাসুরা পারভীনদের বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাসুরা খাতুন তার মা ফাতেমা খাতুনের সাথে গল্প করছেন। পাশেই ছিল তার মেজ বোন।
মাসুরার মা ফাতেমা খাতুন জানান, আমরা গরীব মানুষ। ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলাম। অনেকইে অনেক কথা বলতেন। মেয়ে হয়ে কেন ফুটবল খেলবে। তবে সব বাঁধা অতিক্রম করে তাকে খেলা চালিয়ে যেতে আমি তাকে উৎসাহ দিতাম।
তিনি আরও জানান, মেজ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে বলে আমি মাঝে মাঝে তাকে বিয়ের কথা বলি। তবে বিয়েতে সে সায় দেয়না। ফুটবলই ওর ধ্যান-জ্ঞান।
মাসুরার স্থানীয় কোচ মরহুম আকবার আলীর স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান, পিটিআই মাঠে সাবিনাসহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা ফুটবল খেলত। সে সময় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাসুরা ওই মাঠে বসে খেলা দেখত। মাঝে মাঝে বল মাঠের বাইরে গেলে মাসুরা তা কুড়িয়ে আনত। ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখে আমার স্বামী আকবার আলী তাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে নিয়ে যান। সেই থেকে মাসুরা তার স্বামীর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে খেলতে খেলতে আজ এ পর্যন্ত।
মাসুরার বাবা রজব আলীর নিজস্ব জায়গা-জমি নেই। থাকেন বিনেরপোতায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায়।
রজব আলী জানান, অসুস্থ্যতার জন্য এখন কাজ করতে পারিনা। সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় থাকি। সরকারিভাবে একটি ঘর পেলে খুবই উপকৃত হতাম।
মাসুরা খাতুন জানান, সাতক্ষীরার মানুষের ভালোবাসা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। সাফ জয়ের পরে ফুচবলকে নিয়ে উন্মাদনার জন্য দেশবাসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মাসুরা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির জানান, আগামী রোববার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসুরা পারভীনকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। আর সুবিধাজনক সময়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীনকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.