লসঅ্যাঞ্জেলসে ২৩ গুণ বেশি দামে কনসালের বাড়ি ক্রয়-ব্যবস্থা নিতে দুদককে লিগ্যাল নোটিস

অপরাধ বাংলাদেশ সারাদেশ

লসঅ্যাঞ্জেলসে ২৩ গুণ বেশি দামে কনসালের বাড়ি ক্রয়-ব্যবস্থা নিতে দুদককে লিগ্যাল নোটিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের জন্য গত বছর জুন মাসে একটি বাড়ি কেনা হয়। বাড়িটির ক্রয় মূল্য দেখানো হয় ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার, যা বর্তমান স্থানীয় বাজারমূল্যের চেয়ে ২৩ গুণ বেশি। একইভাবে কনস্যুলেট অফিসের কনসাল’র বাসভবনের জন্য কেনা হয় আরেকটি বাড়ি। এটির মূল্য পরিশোধ করা হয় ৩২ লাখ মার্কিন ডলার। যেটির বাজার মূল্যও ২০ লাখ ডলারের বেশি হওয়ার কথা নয়। বৃহৎ এই দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরেও দেয়া হয় অভিযোগ। কিন্তু এই অভিযোগের কোনো তদন্ত হয়নি। উপরন্তু এই কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা প্রিয়তোষ সাহাকে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়।

 

তদন্ত এড়িয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় বাধ্যতামূলক অবসরে। ঘটনাটি লসঅ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিলেও দুদক কিংবা বাংলাদেশ সরকার নেয়নি কোনো ব্যবস্থা। এ প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে লিগ্যাল নোটিস পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘লাইফ অ্যান্ড ল’ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ নোটিস দেন। নোটিসে পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লস অ্যাঞ্জেলসের তৎকালীন কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিসে বলা হয়, যেহেতু ভবন দু’টি কেনার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী অভিযোগটি যথাযথ অনুসন্ধান, তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কারণ, বিষয়টির সঙ্গে দেশের ভাবমর্যাদা জড়িত। এছাড়া এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সেটা জানার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে।

বৃহৎ এই দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কোনো ধরনের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে দুর্নীতিবাজরা অনুপ্রাণিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী ¯েøাগান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। লিগ্যাল নোটিসের বিষয়ে আশু পদক্ষেপ গ্রহণে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। অন্যথায় বিবাদীদের বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবেÑ মর্মে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। নোটিসে আরো উল্লেখ করা হয়, কনস্যুলেট অফিস এবং আবাসিক ভবন বাজারমূল্যের চেয়েও অনেক বেশি দামে কেনার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনেও এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর সেপ্টেম্বরে লসঅ্যাঞ্জেলসের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ঢাকায় ডেকে এনে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। দুদকের পক্ষ থেকেও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ দুই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা জনস্বার্থ পরিপন্থী। এসব দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের চরম ক্ষতি বলে উল্লেখ করা হয় নোটিসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *