২৬ শে আগস্ট রোজ বুধবার, সকাল ১১:০০ টায়, ঢাকা মহানগড় উত্তর আওয়ামী লীগের এক বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘যারা বলেন গুটিকয়েক বিপথগামী সেনা সদস্য ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারাই মূলত ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের মূল ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। যারা ১৯৭১ সালে পরাজিত হয়েছিল তারা প্রতিশোধ নেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রকে আমরা প্রতিবাদ করতে পারি নাই।’
সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে যারা সমালোচনা করে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মানে না বলেই বিশ্বে আজকে শেখ হাসিনা বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। আজকে বিশ্ব রাজনীতিতে শেখ হাসিনা মধ্যমণিতে পরিণত হয়েছেন।’
গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ‘নতজানু ও দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে যদি সেদিন আশ্রয় না দিতেন, তাহলে নাফ নদীতে সব মানুষগুলোকে আত্মাহুতি দেয়ার মত অবস্থা হত। সেদিন বিশ্ব মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মানবতার ইতিহাসের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শেখ হাসিনার চৌকস-বিচক্ষণ পররাষ্ট্রনীতি কারণে রোহিঙ্গার নিজ দেশে ফেরত যাবে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কোনও রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।’
সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম জানান, করোনাকালে আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই একটি চক্র আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের ঘনঘটা চলছে। কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রকারীরা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আরও সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
করোনাকালের মধ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা এর মধ্যেই ষড়যন্ত্র করে। তারা গণতান্ত্রিক শক্তির, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ শক্তি শেখ হাসিনাকে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’
ষড়যন্ত্রকারীদের মীরজাফর ও ঘষেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘মীর জাফরের মৃত্যু হয়েছে ঘষেটি বেগমের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মীরজাফরের মীরজাফরি চরিত্র, ঘষেটি বেগমদের অপকর্মের মৃত্যু হয়নি। তাদের অনুসারীরা কিন্তু এখনো বেঁচে আছে। সেই পাপ কাজ করার মতো লোকেরা আছে। সেই মীরজাফরি যারা করে তাদের বংশধররা কিন্তু এখনো বেঁচে আছে। তারা সুযোগ পেলেই আঘাত হানবে। এরা সুযোগের অপেক্ষায়। যত বেশি আমরা সংঘবদ্ধ থাকব, এই অপশক্তিরা ততবেশি ঘরে উঠে যাবে। নিঃশ্বেস হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয়েছিল জন্যই বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের সৃষ্টির সঙ্গে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শুধু স্বাধীন বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের যা কিছু কল্যাণকর, যা কিছু মানুষের কল্যাণের জন্য করেছেন সবকিছু হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে আমাদের সকলের সামনে সূর্যের মতো আলো দিয়ে যাচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অনেক ষড়যন্ত্র, হামলা, মামলার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যত ষড়যন্ত্র হয়েছে সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা অকাতরে জীবন দিয়েছেন।’
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা