পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বিজিবি-বিএসএফের ডিজি পর্যায়ের বৈঠক চলছে।
৪ দিনব্যাপী সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক আজ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হয়েছে। বৈঠক এখনো চলছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এবারের সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি, হত্যা ও আহত করা, সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ, ইয়াবা, ভায়াগ্রা অথবা সেনেগ্রা ট্যাবলেটসহ মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের চোরাচালান, অস্ত্র, গোলা-বারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাচার বন্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে বিজিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া অথবা আটক রাখা, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম অথবা বাংলাদেশে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করানো, মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ-ইন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ, উভয় দেশের সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, বাংলাবান্ধা আইসিপিতে দর্শক গ্যালারী নির্মাণ, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে যৌথ টহল পরিচালনা, রিজিয়ন ও ফ্রন্টিয়ার পর্যায়ের অফিসারদের নিয়মিত বৈঠক আয়োজন, পাবর্ত্য অঞ্চলে হিল ফ্লাইং প্রশিক্ষণ ও অপারেশন পরিচালনা এবং উভয় বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও বিরাজমান সৌহার্দ্য বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সম্মেলনে যোগদানের জন্য ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল বুধবার পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরে এসে পৌছেছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি ও বিএসএফ প্রধানের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এছাড়া অস্ত্র ও মাদক পাচার বন্ধের বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) একজন কর্মকর্তা বাসস’কে বলেন, সীমান্ত হত্যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বছর আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ৩৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বৈঠকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক পাচার বন্ধের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
এদিকে বিজিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলন শেষে বিএসএফ প্রতিনিধিদল ঢাকা ত্যাগ করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালকবৃন্দ ও বিজিবি সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসারবৃন্দ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রয়েছেন।
বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের ভারতের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ গ্রহন করেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ও রয়েছেন।
এদিকে বুধবার বিজিবি’র হেলিকপ্টার যোগে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে পৌছলে বিজিবি ডিজি বিএসএফ ডিজিকে অভ্যর্থনা ও ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এবং সেখান থেকে তাকে সঙ্গে নিয়ে পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরে আসেন।
এর আগে বিএসএফ মহাপরিচালকসহ ভারতীয় প্রতিনিধি দল সড়ক পথে আখাউড়া আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুলতানপুর ব্যাটালিয়নে যান। পরে প্রতিনিধিদল সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন থেকে বিজিবি’র হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
এর আগে বুধবার দুপুরে ভারতীয় প্রতিনিধি দল সড়ক পথে আখাউড়া আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে তাদেরকে বিজিবি কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানান।