আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়। উভয় দেশ একে অপরের বিভিন্ন ধরনের শুল্ক চাপিয়ে দিতে শুরু করে। রীতিমতো শুরু হয় বাণিজ্যযুদ্ধ।
এই উত্তেজনার মাঝেই চীনে সূচনা হয় করোনাভাইরাসে। যা ভয়াবহ রূপ নেয় মাত্র কয়েক দিনে। বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর বিষাক্ত ছোবলে দিশেহারা হয়ে পড়ে গোটা বিশ্ব। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সের মতো রাষ্ট্রগুলো।
এই ভাইরাসের ধ্বংসযজ্ঞে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকা। দেশটিতে ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২০ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৪ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫১ জনের। করোনার এই তাণ্ডবে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আমেরিকা।
এদিকে, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পেছনে চীনকেই দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও চরমে পৌঁছেছে।
এবার এই উত্তেজনার মধ্যে রোমানিয়ার বড় ধাক্কা খেল চীন। বিভিন্ন দেশ ও মহাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের প্রভাব তৈরির যে লক্ষ্য নিয়ে চীন এগিয়ে যাচ্ছিল তাতে একটি বড় ধাক্কা খেল রোমানিয়ায়।
চীনের সঙ্গে অবকাঠামোগত চুক্তি স্থগিত করতে যাচ্ছে রোমানিয়া। রোমানিয়া সরকার এরই মধ্যে দুটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার কোম্পানিকে। নিউক্লিয়ারইলেকট্রিকা নামের ওই কোম্পানির ৮০ শতাংশ শেয়ার সরকারের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার চাপের কারণেই রোমানিয়া এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, চীনের কোম্পানি ‘চায়না জেনারেল নিউক্লিয়ার (সিজিএন) রোমানিয়ার ওই কোম্পানির সঙ্গে এই দুটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বড় অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগে ২০১৫ সালে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এতে চীনা ওই কোম্পানির ৫১ শতাংশ বিনিয়োগের চুক্তি ছিল। কিন্তু হঠাৎ শক্তিশালী মিত্র আমেরিকার চাপে এই চুক্তি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দেশটি। ইতোমধ্যে রোমানিয়া সরকার এসব বিষয় নিয়ে অন্য কোনও দেশের কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কোম্পানিকে। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট