সাংবাদিক শেখ মুজিব — আব্দুল গাফফার চৌধুরী

জাতীয় জীবন-যাপন

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক নিয়ে নানা জন লিখছেন। তার রাজনৈতিক জীবন, সামাজিক জীবন, পারিবারিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন কোনোটা নিয়েই আলোচনা বাদ থাকেনি।

বঙ্গবন্ধুর যারা অতি কাছের লোক, যেমন শেখ ফজলুল হক মণি, তিনিও আজ বেঁচে নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, তিনি অত্যন্ত কষ্ট করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, তার কারাগারের রোজনামচা খুঁজে বের করে প্রকাশ করেছেন। তথাপি বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যের মতো জীবনের সব দিক উদ্ঘাটিত হয়নি।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ হয়েছে ১৯৪৫ সালে। হিটলারের মৃত্যু ওই বছরেই। তারপর ৭৫ বছর চলে গেছে। আমরা এতকাল জেনেছি হিটলার একজন নিষ্ঠুর চরিত্রের ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক ছিলেন। তিনি লাখ লাখ ইহুদি হত্যা করেছেন।

কিন্তু এখন হিটলারকে নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার পর এক ইতিহাসবিদ একটি বই লিখেছেন। লন্ডনের সানডে টাইমসের ম্যাগাজিনের গ্রন্থ সমালোচনায় বইটির প্রশংসা করা হয়েছে।

হিটলার সম্পর্কে সম্প্রতি প্রকাশিত এই বইটিতে তার চরিত্রের একটি অজানা দিক দেখানো হয়েছে। তিনি কেমন স্বভাবের মানুষ ছিলেন। শিশুদের ভালোবাসতেন। গান শুনতেন। নিজে ছবি এঁকেছেন। হিটলারের চরিত্রের এ দিকটির কথা এতদিন চাপা রাখা হয়েছিল।

হিটলার যতটা নিষ্ঠুর ছিলেন, তারচেয়ে অনেক বেশি নিষ্ঠুর এবং নরপশু হিসেবে দেখানো হয়েছে। হিটলারের শত্রুপক্ষের এটা ছিল একতরফা প্রচার। একজন ইতিহাসবিদ তাই বলেছেন, ইতিহাস হচ্ছে জয়ীর ইতিহাস। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে যদি হিটলার জয়ী হতো, তাহলে হয়তো ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। হিটলারের বদলে চার্চিলকে দেখানো হতো নরদানব হিসেবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হিটলার ছিলেন না। ছিলেন তার বিপরীত চরিত্রের মানুষ। তিনি লড়াই করেছেন ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে একটি জনগোষ্ঠীর মুক্তি ঘটানোর জন্য। তাদের বিলুপ্ত জাতিগত পরিচয়, ভাষা ও সংস্কৃতি উদ্ধার করার জন্য।

তিনি তার দেশ ও জাতির জন্যই জীবন দান করে গেছেন। তথাপি এই মানুষটির চরিত্রেও কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা করেছে তার শত্রু প্রতিক্রিয়াশীল দেশি-বিদেশি চক্র। তাকে স্বৈরাচারী বানিয়ে, তার বাকশাল শাসন পদ্ধতিকে একদলীয় শাসন প্রমাণ করার জন্য দীর্ঘকাল চেষ্টা করেছে।

দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করেছে। সোভিয়েত নেতা স্টালিনকে যেমন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের অনুচর একদল ইতিহাসবিদ হিটলারের মতো একই চরিত্রের ফ্যাসিস্ট ডিক্টেটর হিসেবে দেখাতে চান, তেমনি তাদের মতো বাংলাদেশেও একশ্রেণির লোক বঙ্গবন্ধুর চরিত্র বিকৃত করতে চেয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হননের এই চেষ্টা সফল হয়নি। বরং সব আরোপিত কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু আজ জাতির পিতা ও রাষ্ট্রের স্থপতির আসনে অধিষ্ঠিত। তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবী ও ইতিহাসবিদরা তার চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করছেন।

কিন্তু তার মহাকাব্যের মতো জীবনের সব দিক উত্থাপিত হয়নি। ধীরে ধীরে তা অবশ্যই হবে। আজ আমি তার জীবনের একটি দিক আলোচনা করব। যা হয়তো অনেকেরই জানা। কিন্তু আলোচিত হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে সাংবাদিকতাও করেছেন। ১৯৪৫-৪৬ সালের দিকে মুসলিম লীগের প্রগতিশীল হাশেম-সোহরাওয়ার্দী গ্রুপ ‘সাপ্তাহিক মিল্লাত’ নামে একটি কাগজ বের করে। এই কাগজের প্রধান সম্পাদক ছিলেন আবুল হাশেম এবং সম্পাদক ছিলেন কাজী মোহাম্মদ ইদরিস।

বঙ্গবন্ধু তখন আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ছাত্র। কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজ) পড়েন এবং বেকার হোস্টেলে থাকেন।

নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগের যে অংশ তখন হাশেম-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পরিচালিত প্রগতিশীল অংশের সমর্থক, বঙ্গবন্ধু সেই গ্রুপের একজন নেতা ছিলেন। তিনি মিল্লাত পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। এমনকি এই পত্রিকা বিক্রির জন্য ছোট একটি ছাত্র গ্রুপ নিয়ে হাওড়া ও শেয়ালদা স্টেশনে যেতেন।

কখনও সোহরাওয়ার্দী বা আবুল হাশেমের সঙ্গে মফস্বল সফরে গেলে মিল্লাত পত্রিকা সঙ্গে নিতেন প্রচার বৃদ্ধির জন্য।

দৈনিক আজাদ তখন মুসলিম লীগের প্রতিক্রিয়াশীল নাজিমউদ্দীন গ্রুপের সমর্থক। আবুল হাশেম ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে আজাদ কৌশলে প্রচার চালাত। বঙ্গবন্ধু ছদ্মনামে এই প্রচারণার কোনো কোনোটির জবাব লিখতেন ছোট ছোট প্রবন্ধের মাধ্যমে।

তার এই সাংবাদিকতার কথা আমি বহু পরে জানতে পারি কাজী মোহাম্মদ ইদরিসের মুখে, যখন তিনি ঢাকায় অবজারভার গ্রুপের বাংলা সাপ্তাহিক পল্লীবার্তার সম্পাদক- সময়টা ১৯৬৬ কী ’৬৭ সাল। ইদরিস ভাই শেখ মুজিব কী ছদ্মনামে মিল্লাতে অনিয়মিতভাবে লিখতেন, সেই নামটাও বলেছিলেন। নামটা ছিল মখ্কি।

আমার ইচ্ছে ছিল কথাটার সত্যতা এক সময় বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেব। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি মিল্লাতে মাঝে মাঝে লিখতেন সে কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু নিজের ছদ্মনাম কী ছিল স্মরণ করতে পারেননি।

বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও তার সাংবাদিকতার কোনো কথা উল্লেখ করেননি। সম্ভবত এটাকে তিনি গুরুত্ব দিতে চাননি।

১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের কিছু আগে বিখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিক আবুল মনসুর আহমদ হক সাহেবের কৃষক প্রজা পার্টি ছেড়ে মুসলিম লীগে যোগ দেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, তখন হাশেম-সোহরাওয়ার্দী গ্রুপের উদ্যোগে দৈনিক ইত্তেহাদ বের হয় কলকাতা থেকে।

১৯৯ পার্ক স্ট্রিটে ছিল ইত্তেহাদ অফিস। আবুল মনসুর আহমদ হন সম্পাদক। পত্রিকাটি তরুণ প্রজন্মের বাঙালি মুসলমান পাঠকদের মধ্যে বিশাল জনপ্রিয়তা লাভ করে।

আবুল মনসুর আহমদের দৃষ্টি ছিল প্রতিশ্রুতিশীল তরুণদের দিকে। তিনি তাদের সাংবাদিকতার দিকে টানতে চেয়েছেন। তিনি দৃষ্টি দিয়েছিলেন শেখ মুজিব ও তফাজ্জল হোসেন মানিক (পরবর্তীকালে ঢাকায় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক) মিয়ার দিকে।

মানিক মিয়া চাকরি নিয়েছিলেন ইত্তেহাদের ব্যবস্থাপনা বিভাগে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইত্তেহাদে দু-চার কলম লিখতেন। তিনি তাকে সাংবাদিক হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। শেখ মুজিবকেও উৎসাহ দিয়েছিলেন।

কিন্তু শেখ মুজিব তাকে বলেছিলেন: মনসুর ভাই, মিল্লাতের মতো ইত্তেহাদেও আমি লিখব। কিন্তু সাংবাদিক হব না। সাংবাদিকতা আমার নেশা। কিন্তু পেশা রাজনীতি। আমি রাজনীতিক হব।

বঙ্গবন্ধুর মতো মানিক মিয়াও ছিলেন মুসলিম লীগের হাশেম-সোহরাওয়ার্দী গ্রুপের সমর্থক। একই রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী।

সম্ভবত কলকাতায় শহীদ সোহরাওয়ার্দীর থিয়েটার রোডের বাসা অথবা ইত্তেহাদের পার্ক স্ট্রিটের অফিসে শেখ মুজিব ও মানিক মিয়ার পরিচয়, এই পরিচয় পরে ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হয়। স্থাপিত হয় বড় ভাই ও ছোট ভাইয়ের সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধু মানিক মিয়াকে ডাকতেন মানিক ভাই। মানিক মিয়া তাকে ডাকতেন মুজিবর মিয়া।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুজিব-মানিক মিয়া জুটির অভ্যুদয় এক ঐতিহাসিক ঘটনা। একজন রাজনৈতিক নেতা, অপরজন সাংবাদিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে এই দুটি নাম ইতিহাসে সমানভাবে উচ্চারিত হবে। মানিক মিয়াকে বঙ্গবন্ধু কতটা সম্মান করতেন তার প্রমাণ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকার সবচেয়ে বড় রাস্তাটির নামকরণ মানিক মিয়া এভিনিউ করা।

বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে আমার আগেকার এক লেখায় লিখেছি, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় বরিশালে ১৯৪৯ সালে। আমি নবম শ্রেণির ছাত্র জেনে বলেছিলেন, ‘মেট্রিক পাস করে ঢাকায় এলে আমার সঙ্গে দেখা করো।’

১৯৫০ সালে মেট্রিক পাস করে ঢাকায় আসি এবং বঙ্গবন্ধুকে (তখন মুজিব ভাই ডাকি) খুঁজতে গিয়ে তাকে পাই পুরান ঢাকার কারকুন বাড়ি লেনের সাপ্তাহিক ইত্তেফাক অফিসে। বাংলা ভাগের পর মানিক মিয়া কলকাতা থেকে বরিশালে তার বাড়ি ভাণ্ডারিয়া চলে যান।

ঢাকায় তখনও আসেননি। মওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবের উদ্যোগে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক প্রকাশিত হয়। অফিস ছিল কারকুন বাড়ি লেনে। সম্পাদক ছিলেন ফজলুর রহমান খান।

মুজিব ভাই ইত্তেফাকের সেই সপ্তাহের লেখাজোকা সম্পর্কে সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন। তিনি আমাকে ইত্তেফাক অফিসে এসে মাঝে মাঝে লেখাজোকার ব্যাপারে সাহায্য করতে অনুরোধ জানালেন।

বললেন, তিনিও ইত্তেফাকে নিয়মিত না হলেও লিখছেন। রাজনৈতিক ব্যস্ততার জন্য সময় পাচ্ছেন না। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ঢাকায় এলে শেখ মুজিবই তাকে ডেকে এনে সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের পদ গ্রহণে সম্মত করান। পরে মানিক ভাই যখন ’৫৪ সালের নির্বাচনের আগের বছর দৈনিক ইত্তেফাক প্রকাশ করেন, তখনও তাকে সাহায্য জোগান মুজিব ভাই।

শেখ মুজিব নিজে পত্রিকা বের করেন ১৯৫৬ কী ১৯৫৭ সালে। নাম সাপ্তাহিক ‘নতুন দিন’। তিনি নিজে ছিলেন প্রধান সম্পাদক এবং কবি জুলফিকার ছিলেন সম্পাদক। কবি জুলফিকার ছিলেন মুজিব ভাইয়ের রাজনীতির ঘনিষ্ঠ অনুসারী। পত্রিকাটি কিছুদিনের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এই সময় বঙ্গবন্ধু একটি আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের নাম ‘দুই অর্থনীতির আন্দোলন’। ঢাকার মাহবুব আলী ইন্সটিটিউটে (এখন আছে কি না জানি না) দুই অর্থনীতির দাবিতে তিনি একটি সম্মেলন করেন। তাতে অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকসহ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদরা যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি পাকিস্তানভক্ত অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনও যোগ দিয়েছিলেন।

এই সভায় শেখ মুজিব বলেন, পাকিস্তানের শাসকরা পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তানের উৎপাদিত পণ্যের কনজুমার মার্কেটে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। পূর্ব পাকিস্তানের শিল্পোন্নয়নের কোনো ব্যবস্থাই তারা করছেন না। এমনকি কৃষি ব্যবস্থারও সংস্কার করছেন না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ব পাকিস্তানে ভূমি কম, এখানে শিল্পোন্নয়ন দরকার। পশ্চিম পাকিস্তানে অনাবাদি ভূমি বিস্তর। সেখানে কৃষি উন্নয়নের ব্যবস্থা হওয়া সঙ্গত। কিন্তু পাকিস্তানের অবাঙালি কেন্দ্রীয় সরকার শিল্পোন্নয়ন ও কৃষি উন্নয়ন দুটোই চালাচ্ছেন পশ্চিম পাকিস্তানে।

পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে তারা অধিকৃত উপনিবেশের মতো ব্যবহার করছেন। তার পাট থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রাও পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে।

শেখ মুজিব শুধু দুই অর্থনীতি নিয়ে বক্তৃতা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তিনি তার সম্পাদিত নতুন দিন কাগজে ধারাবাহিকভাবে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন- দুই অর্থনীতি কেন? এই প্রবন্ধে তিনি বলেন, পাকিস্তানের দুই অংশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক চাহিদা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

এই অবস্থায় বাস্তবতাকে স্বীকার করে দেশের দুই অংশের জন্য দুই ধরনের অর্থনীতি প্রণয়ন ও অনুসরণ দরকার। তার এই প্রবন্ধটি তখন পূর্ব পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী মহলে সাড়া তৈরি করেছিল। নতুন দিন পত্রিকাটি কারও সংগ্রহে আছে কি না জানি না।

কারও কাছে থাকলে তা থেকে এই প্রবন্ধটি গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হলে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাভাবনায় যে তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই বাঙালির স্বার্থ অধিকারের কথা প্রাধান্য পেয়েছে তা বোঝা যেত। দুই অর্থনীতির আন্দোলন থেকে ছয় দফার আন্দোলন এবং তা থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধ- এই ইতিহাসই বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।

লেনিন বিপ্লবী রাজনীতিক হয়েও সাংবাদিকতা করতেন। নির্বাসিত জীবনে লন্ডন থেকে রুশ ভাষায় ইসক্রা নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করতেন। সেই পত্রিকাই ছিল রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের মুখপত্র।

বঙ্গবন্ধুও রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি সংবাদপত্র বের করেছেন, যা ছিল বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের একটি দীপশিখার মতো। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করার পর শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয়। নতুন দিনের প্রকাশ সামরিক সরকার বন্ধ করে দেয়। বঙ্গবন্ধুর সাংবাদিকতা সম্পর্কে আরও তথ্য আমার জানা আছে। ভবিষ্যতে সময় ও সুযোগ পেলে তা লিখব।

লন্ডন, ১৫ মার্চ, রবিবার, ২০২০।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *