নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক থেকে কয়েক মাস ধরেই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। চিকিৎসকরা মাস্ক-স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে বারবার বলে আসছেন। তবে শুরু থেকে কভিড-১৯ মহামারীকে পাত্তা না দেয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোঁ ধরেছিলেন যে তিনি কিছুতেই মাস্ক পরবেন না।
নিজ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত স্বয়ং প্রেসিডেন্ট না মানায় বেশ কয়েকটি জায়গায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় তাকে। অবশেষে সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হলেন ট্রাম্প। প্রথমবারের মতো মাস্ক পরে ক্যামেরার সামনে এসেছেন তিনি। ছবি তুলতে বাধাও দেননি। এর আগে একটি কারখানা সফরে গেলে ভেতরে মাস্ক পরলেও সাংবাদিকদের সামনে মাস্ক রাখেননি তিনি। তখন বলেছিলেন তিনি সাংবাদিকদের সামনে রসদ সরবরাহ করতে চান না।
শনিবার মেরিল্যান্ডের ওয়াল্টার রেড হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় তিনি মাস্ক ব্যবহার করেন। হাসপাতালে তিনি বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে আহত মার্কিন সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
হাসপাতালের বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্রাম্পকে মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে। তবে বাকি সময় তার ধারেকাছেও সাংবাদিকদের ঘেঁষতে দেননি। এ নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য
হিল এক টুইটার পোস্টে ব্রেকিং নিউজ দিয়ে জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওয়াল্টার রেড হাসপাতাল পরিদর্শন করছেন এবং তিনি মাস্ক পরেছেন।
কভিড-১৯ মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষাধিক মানুষ মারা গেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ মহামারী ছড়ানোর জন্য চীনকে দোষারোপ করে আসছেন। শুরুর দিকে সাধারণ ফ্লু আখ্যা দিয়ে এ ভাইরাসকে গুরুত্ব দেননি ট্রাম্প। তিনি নিজে মাস্ক পরতেন না, এমনকি মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন। এ নিয়ে তার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এমনকি তিনি তার সহকারীদের বলেছিলেন, মাস্ক পরলে তাকে দুর্বল মনে হবে এবং মিডিয়া তাকে দুর্বলভাবে উপস্থাপন করুক এটা চান না।
এ অবস্থায় তার দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা ট্রাম্পকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, তাতে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সমর্থন বাড়বে।
শেষ পর্যন্ত মাস্ক পরা নিয়ে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টার পরিদর্শনের সময় যে মাস্ক পরবেন তা আগেই বলে রেখেছিলেন তিনি।
ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, আমি মনে করি, একটা খুবই উপযুক্ত জিনিস। মাস্কে আমার কোনো সমস্যা নেই।
হোয়াইট হাউজ ত্যাগের সময়ও তিনি বলেন, আমি কখনই মাস্কের বিরুদ্ধে ছিলাম না। তবে আমি মনে করি এগুলো পরার স্থান ও কাল রয়েছে।